উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং-উন কি সত্যিই গুরুতর অসুস্থ? নাকি তিনি চলে গেছে না ফেরার দেশে? এক সপ্তাহ ধরে এমন সব জল্পনাকল্পনা নতুন মাত্রা পেল উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্টের বিশেষ ট্রেনটিকে উনসানের বিশেষ একটি স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখার দাবি করেছে উত্তর কোরিয়ার উপর নজর রাখা ওয়াশিংটনের ‘থার্টিএইট নর্থ’।

কয়েকদিন আগে শোনা গিয়েছিল, কিম নাকি মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। শনিবার উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং-উন-কে নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়ানো গুজবে বলা হল, ৩৬ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন উত্তর কোরিয়ার শাসক। কিমের মৃতদেহের ছবি বলে একটি পোস্টও গতকাল ভাইরাল হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়।

শনিবার থার্টিএইট নর্থ-এর একটি রিপোর্ট জানিয়েছে, কিম ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা যাওয়া-আসা করেন যে বিশেষ ট্রেনে, গত ২১ এবং ২৩ এপ্রিল সেটিকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গিয়েছে উত্তর কোরিয়ার পূর্ব উপকূলবর্তী রিসর্ট শহর উনসানের ‘লিডারশিপ স্টেশন’-এ। শুধু প্রেসিডেন্ট আর তাঁদের পরিবারের সদস্যদের ওঠা-নামার জন্যই এই স্টেশনে ট্রেন থামে। যদিও সেই ট্রেনে কিম ছিলেন কি না বা তিনি উনসানেই আছেন কি না, সে ব্যাপারে কিন্তু নিশ্চিত হওয়া সম্ভব হয়নি।

থার্টিএইট নর্থ-এর রিপোর্টে বলা হয়েছে, ‘‘ট্রেন দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গিয়েছে মানে যে কিম তাতে আছেন বা তা থেকে ওঠা-নামা করেছেন, তা নিশ্চিত ভাবে বলা যায় না। এর থেকে বলা যায় না কিমের শরীর-স্বাস্থ্যের কথাও। তবে কিম উনসানে থাকতে পারেন যেটা রটেছে, এই তথ্যকে তার সমর্থনে পেশ করা যেতে পারে।’’

কয়েকদিন আগেই কিম জং-উনের অসুস্থতার খবরে শোরগোল পড়ে গিয়েছিল সর্বত্র। দক্ষিণ কোরিয়ার একটি ওয়েব পোর্টাল জানিয়েছিল, হৃদযন্ত্রে অস্ত্রোপচারের পর সঙ্কটজনক অবস্থায় একটি রিসর্টে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি। সেখানে পরিবার-পরিজন রয়েছেন তাঁর সঙ্গে। একটি চিকিৎসক দলের পর্যবেক্ষণে রয়েছেন তিনি।

গত ১১ এপ্রিলের পর উত্তর কোরিয়ার কোনও সরকারি সংবাদমাধ্যমেই কিমের ছবি বা ভাষণ প্রকাশিত হয়নি। তাঁর শরীর-স্বাস্থ্য নিয়ে পিয়ংইয়ংয়ের কোনও সংবাদমাধ্যমকেই মুখ খুলতে দেখা যায়নি। গত ১৫ এপ্রিল উত্তর কোরিয়ার জন্মদিবসেও কোনও অনুষ্ঠানে দেখা যায়নি কিমকে।

সেই সময়ও উত্তর কোরিয়ার পক্ষ থেকে কোনও মন্তব্য করা হয়নি। তবে দক্ষিণ কোরিয়ার পক্ষ থেকে সেই রিপোর্ট নিয়ে সংশয় প্রকাশ করা হয়েছে। প্রেসিডেন্টের বাসভবন ব্লু হাউসের বিশেষ সূত্র জানায়, অস্ত্রোপচার হলেও কিমের অবস্থা সঙ্কটজনক নয়। এও জানায়, চিন চিকিৎসকদের একটি দল পাঠিয়েছে পিয়ংইয়ংয়ে।

তার পরই কিম জংয়ের ‘মৃত্যুসংবাদ’ সামনে আসে শনিবার। হংকংয়ের একটি টিভি চ্যানেলে উত্তর কোরিয়ার শাসকের মৃত্যুর খবর সম্প্রচারিত হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। কিমের মৃতদেহের ছবি বলে একটি পোস্টও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। কিন্তু সেটি আসলে তার বাবা কিম জং ইলের শেষযাত্রার ছবি।

উত্তর দিন

Please enter your comment!
Please enter your name here

fourteen − eleven =