যুক্তরাজ্যে করোনা সংকট মোকাবিলায় রীতিমতো হিমশিম খাওয়া বরিস প্রশাসনের ব্যর্থতার কারণ অনুসন্ধানে নেমেছে বিরোধীদলগুলো। তীব্র সমালোচনার মুখে প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের সরকার। ইউরোপের যে কয়েকটি দেশে কোভিড-১৯ সংক্রমণ মারাত্মক রূপ নিয়েছে, তাদের অন্যতম যুক্তরাজ্য। সংবাদসূত্র : ডয়চে ভেলে, রয়টার্স

এদিকে, আন্তর্জাতিক জরিপ সংস্থা ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্যমতে, শুক্রবার পর্যন্ত দেশটিতে মোট আক্রান্ত এক লাখ ৪৩ হাজারের বেশি এবং মৃত্যু ১৯ হাজার ছাড়িয়েছে। খোদ প্রধানমন্ত্রী বরিসও করোনায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিতে তাকে হাসপাতালে যেতে হয়েছে। ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা দেশে কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর প্রকৃত তথ্য দিতে ব্যর্থ হয়েছে। যথেষ্ট টেস্টও (পরীক্ষা) করাতে পারেনি, এমনকি হাসপাতালগুলোতে স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য প্রয়োজনীয় সুরক্ষাসামগ্রী (পিপিই) পর্যন্ত সরবরাহ করতে পারেনি।

যুক্তরাজ্যের মতো উন্নত দেশে চিকিৎসাকর্মীদের পলিথিন ব্যাগ পরে করোনা আক্রান্তদের সেবা দিতে হয়েছে। যে কারণে সেখানে স্বাস্থ্যকর্মীদের সংক্রমিত হওয়ায় হারও অনেক বেশি। কয়েকজন মারাও গেছেন। ইউরোপে; বিশেষ করে ইতালি, স্পেন ও ফ্রান্সে যখন করোনাভাইরাস সংক্রমণ বিপজ্জনকভাবে ছড়িয়ে পড়ছিল এবং বিস্তার রোধে দেশগুলোর সরকার কড়াকড়ি আরোপ করছিল, তখনও বরিস দেশজুড়ে যাতায়াত ও জনসমাগমে নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিপক্ষে ছিলেন।

পরে বিভিন্ন স্বাস্থ্য সংস্থা কোভিড-১৯ এ যুক্তরাজ্যে তিন লাখের বেশি মানুষের মৃতু্যর আশঙ্কা প্রকাশ করলে বরিস লকডাউন ঘোষণা করেন। সময়মতো ‘ইউরোপীয় ইউনিয়ন ভেন্টিলেটর স্কিম’-এ যোগ দিতে এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য প্রয়োজনীয় সুরক্ষা যন্ত্রের যোগান দিতে ব্যর্থ হওয়ার দায় কাঁধে নিয়ে বরিসের সরকার অবশ্য এর কারণ বোঝাতে জটিল একটি ব্যাখ্যা দিয়েছে।

তবে বিরোধীদলগুলো তাদের এই ব্যাখ্যা মানতে রাজি নয়। বুধবার এক বিবৃতিতে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির ভারপ্রাপ্ত নেতা ইডি ডেভি বলেন, ‘বৈশ্বিক এই মহামারিতে সরকার যেভাবে সাড়া দিয়েছে, অবশ্যই তার আনুষ্ঠানিক তদন্ত হওয়া উচিত।’ তিনি আরও বলেন, ‘কেন সরকার আশ্চর্যজনকভাবে স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রয়োজনীয় সুরক্ষাসামগ্রী দিতে ব্যর্থ হয়েছে এবং সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি, তার সত্য কারণ জানাতে সরকারকে সুযোগ দেওয়া উচিত।

দিন দিন সবার মনেই এই প্রশ্ন জাগছে।’ বিরোধী লেবার পার্টির নেতা কির স্টারমারও মনে করেন করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে সরকার পিছিয়ে ছিল এবং একই সঙ্গে যুক্তরাজ্যকে এই সংকটে পেছনের দিকে তাকিয়ে দেখতে হবে। শিগগিরই স্বাভাবিক জীবনে ফেরার চিন্তা অবাস্তব এদিকে, করোনা পরিস্থিতি কাটিয়ে শিগগিরই স্বাভাবিক জীবনযাপনে ফিরে আসার চিন্তাকে ‘অবাস্তব’ বলে মনে করছেন যুক্তরাজ্য সরকারের প্রধান চিকিৎসা উপদেষ্টা ক্রিস হুইটি। তার আশঙ্কা, অন্ততপক্ষে চলতি বছরের শেষ পর্যন্ত মানুষকে সামাজিক দূরত্বের মধ্যে থাকতে হতে পারে। বুধবার যুক্তরাজ্য সরকারের করোনাভাইরাস সংক্রান্ত নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এ আভাস দেন হুইটি।

উত্তর দিন

Please enter your comment!
Please enter your name here

17 − twelve =