জম্মু-কাশ্মীরের বাসিন্দাদের জন্য বিশেষ সুবিধা সম্বলিত ৩৭০ ধারা প্রত্যাহারের পর এ পর্যন্ত ১৫ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে তথ্য জানিয়েছে কাশ্মীরের বণিক সংগঠন কেসিসিআই । প্রকৃত আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ জানতে তথ্য সংগ্রহের কাজ শুরু হয়েছে। গত ৫ আগস্ট ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা প্রত্যাহার করে নেয় এবং সেখানে বিভিন্নপ্রকার কঠোর বিধিনিষেধ আরোপে কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে জম্মু-কাশ্মীরের বাসিন্দারা ।
কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে সেখানকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে বলে জানানো হয়েছে। কিন্তু ৩৭০ ধারা বাতিলের পরে ১২৪ দিন পার হয়ে গেলেও কাশ্মীর উপত্যকা এখনও সম্পূর্ণ স্বাভাবিক হয়নি। সেখানে এখনও এক জায়গার সঙ্গে অন্য জায়গার যোগাযোগ পুরোপুরি গড়ে ওঠেনি। দোকানপাট খোলা থাকছে সকাল সাতটা থেকে দুপুর একটা পর্যন্ত মাত্র। এভাবে সীমিত সময়ের জন্য দোকানপাট খোলা থাকায় অর্থনীতির ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে।
কাশ্মীরের বণিক সংগঠন কেসিসিআইয়ের এক পরিসংখ্যানে প্রকাশ, গত ৫ আগস্টের পরে গত ১২৪ দিনে উপত্যকার আর্থিক ক্ষতি ১৫ হাজার কোটি টাকা। কেসিসিআইয়ের প্রেসিডেন্ট শেখ আশিক আহমেদ বলেছেন, ‘পরিস্থিতি এখনও স্বাভাবিক হয়নি। এরফলে কাশ্মীরের অর্থনীতির ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে।’ যদিও ওই হিসাব সম্পূর্ণ নয় বলে তিনি জানিয়েছেন। প্রকৃত ক্ষতি জানতে অর্থনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব মহলের থেকে তথ্য সংগ্রহ শুরু হয়েছে।
কেসিসিআইয়ের প্রেসিডেন্ট শেখ আশিক আহমেদ বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতি জানতে প্রত্যেক ব্যবসায়িক সংগঠনের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ রাখছি। ব্যবসায়ীদের থেকে আমরা অনেক তথ্য পাচ্ছি। তাঁদের ক্ষতি পুষিয়ে দিতেই আমরা কেবল তথ্য সংগ্রহ করছি না। ওই রিপোর্ট আমরা প্রকাশ করতে চাই। কেসিসিআইয়ের কর্মীরা এ ব্যাপারে ব্যাপকভাবে তথ্য সংগ্রহ করছেন। এক সপ্তাহের মধ্যেই এ সংক্রান্ত রিপোর্ট প্রকাশ করা হবে।’
শেখ আশিক আহমেদ বলেন, ‘গত ৫ আগস্টের পর থেকে উপত্যকায় ব্যবসায় যেন রক্তপাত শুরু হয়েছে। ইন্টারনেট পরিসেবা বন্ধ করে দেওয়ায় যোগাযোগের অভাবে বহু ব্যবসা বন্ধ হয়ে যায়। আর অনিশ্চয়তার জেরে হস্তশিল্প সামগ্রী উৎপাদন সম্পূর্ণ বন্ধ। কেসিসিআইয়ের মতে, কমপক্ষে পঞ্চাশ হাজার হস্তশিল্পী কর্মচ্যুত হয়েছেন। এছাড়া হোটেল ও রেস্তরাঁয় কাজ হারিয়েছেন ৩০ হাজারেরও বেশি মানুষ। ক্যুরিয়ার ও ই-কমার্স ক্ষেত্রে কাজ হারিয়েছেন ১০ হাজার কর্মী। যোগাযোগ ব্যবস্থার অভাবে একসময় প্রতিদিন উপত্যকায় ১২০ কোটি টাকা করে লোকসান হতো। এখন পরিস্থিতির সামান্য উন্নতি হয়েছে। গত বছর এই সময়ে কাশ্মীরে পর্যটক এসেছিলেন ১ লাখ ৮৫ হাজার ৫৭ জন। কিন্তু গত ১০ অক্টোবর পর্যটকদের প্রবেশে বিধিনিষেধ প্রত্যাহারের পর এখানে এসেছেন মাত্র ১০ হাজার পর্যটক।