কারাগারে ডাক্তার নিয়োগসংক্রান্ত মামলার শুনানিতে হাইকোর্ট বলেছেন, স্বাস্থ্য খাতের সর্বস্তরে দুর্নীতি বিস্তার করছে। দুদক ঠিকমতো কাজ করলে এত দুর্নীতি বাড়ত না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চেষ্টা করার পরও পাকিস্তান–ব্রিটিশ আমলাতন্ত্রের পরিবর্তন হচ্ছে না। যে সরকারই আসুক আমলারা সব সময় থাকে। তারা কেন দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত হয়?

বিচারপতি কেএম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মাদ শওকত আলী চৌধুরী সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ মঙ্গলবার এসব মন্তব্য করেন।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী জে আর খান রবিন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ সাইফুজ্জামান।

শুনানিতে কারা কর্তৃপক্ষ এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের আইনজীবীর উদ্দেশে হাইকোর্ট বলেন, ‘উই আর সন অব দ্য সয়েল। আমরা সবই জানি, আমাদের ভুল বোঝাবেন না। আমি বঙ্গবন্ধু হাসপাতালে গিয়েছিলাম। দেখলাম, বাইরের অনেক দেশের ছোট হাসপাতালের অবস্থা এখানকার চেয়ে ভালো। আখেরাতে বিশ্বাস করলে দুর্নীতি করতে পারতেন না। আর কত দুর্নীতি করবেন? দুর্নীতির একটা সীমা থাকা উচিত। প্রধানমন্ত্রীর এলাকা ফরিদপুর মেডিকেলেও দুর্নীতি হয়েছে।’

আদালত আরও বলেন, ‘কারাগারে অনেক নিরীহ মানুষ থাকে। তাই মানুষ শাস্তি পেলে ক্ষমা পাবেন না। ডাক্তাররা সবাই ঢাকায় থাকতে চান। প্রাইভেট প্র্যাকটিস করে, কোম্পানির প্রতিনিধির সঙ্গে যোগসাজশ করে ওষুধ লেখে। এ সময় প্যারামেডিকেলের ডাক্তারদের বিএমডিসি অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ লেখার অনুমতি কেন দিয়েছে সে প্রশ্নও তোলেন হাইকোর্ট।’

পরে রিটকারী আইনজীবী জে আর খান রবিন সাংবাদিকদের বলেন, কারা অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী কারাগারে ১৪১টি পদের বিপরীতে এরই মধ্যে ১২৫ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে এবং ডাক্তার নিয়োগে খসড়া নীতিমালা চূড়ান্তের পর্যায়ে রয়েছে। এ পর্যায়ে হাইকোর্ট ১৬টি শূন্য পদে নিয়োগ সম্পন্ন এবং খসড়া নীতিমালা চূড়ান্ত করার বিষয়ে আগামী ৬ জুনের মধ্যে জানাতে সংশ্লিষ্টদের মৌখিকভাবে নির্দেশ দিয়েছেন।

কারাবন্দীদের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিতে দেশের কারাগারগুলোতে শূন্য পদে দ্রুত চিকিৎসক নিয়োগের নির্দেশনা চেয়ে ২০১৯ সালে রিট করেন আইনজীবী মো. জে আর খান রবিন। পরে কয়েক দফায় শুনানি শেষে শূন্য পদে চিকিৎসক নিয়োগ দিতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার বিষয়টি শুনানির জন্য হাইকোর্টের কার্যতালিকায় আসে।

উত্তর দিন

Please enter your comment!
Please enter your name here

fifteen − three =