করোনাভাইরাসের মহামারির এ সময়ে ঘরে বসেই কাজ করছেন বিশ্ব নেতারা। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনও তাদের বাইরে নন। রাজধানী মস্কোর মূল শহরের কিছুটা বাইরে সরকারি বাসভবনে বসেই ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে নানা দিক নির্দেশনা দিচ্ছেন তিনি। মাসখানেক আগেও করোনাভাইরাস মোকাবিলায় নিজের সরকারের সক্ষমতার কথা জোর দিয়ে প্রচার করেছেন পুতিন। জনগণকে আশ্বাস দিয়েছেন সবকিছু ঠিকঠাকমতো সামলানো হবে। মহামারিতে বিপর্যস্ত যুক্তরাষ্ট্রে চিকিৎসা সরঞ্জাম পর্যন্ত পাঠিয়েছেন পুতিন। তবে গত দু-তিন সপ্তাহের ব্যবধানে পাল্টে গেছে রাশিয়ার পরিস্থিতি। যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদ মাধ্যম সিএনএন অনলাইনের এক বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, রাশিয়ায় করোনাভাইরাস পরিস্থিতি ক্রমেই খারাপের দিকে যাচ্ছে।
গত সোমবার সরকারের উর্ধ্বতনদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্স করেন পুতিন। সেই বৈঠকে প্রেসিডেন্ট স্বীকার করেন, পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাচ্ছে। তবে অনেক সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও মহামারি মোকাবিলা করার দৃঢ়তাও দেখিয়েছেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের তুলনায় রাশিয়ায় করোনাভাইরাসের প্রকোপ কম। তবে সে পরিস্থিতি পাল্টাচ্ছে। গত সোমবার দেশটিতে একদিনে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা এক লাফে বেড়ে দাঁড়ায় ২ হাজার ৫৫৮ জনে। পরদিন মঙ্গলবার নতুন করে আক্রান্ত হন ২ হাজার ৭৭৪ জন। এপ্রিলের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে।
ওয়ার্ল্ডওমিটারের তথ্য অনুযায়ী, রাশিয়ায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা বুধবার পর্যন্ত ২৪ হাজার ৪৯০ জন। মৃত্যু হয়েছে ১৯৮ জনের। সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৯৮৬ জন।
এমন পরিস্থিতিতে প্রেসিডেন্ট পুতিন চাপে পড়তে শুরু করেছেন। মস্কোভিত্তিক থিংক ট্যাঙ্ক কার্নেগি মস্কো সেন্টারের গবেষক তাতিয়ানা স্ট্যানোভায়া মনে করেন, করোনাভাইরাসের মহামারি সাধারণ জনগণের কাছ থেকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্টকে আরও দূরে সরিয়ে দিয়েছে। দেশে আজ আলোচনার অন্যতম বিষয় হলো, এই পরিস্থিতির মধ্যে প্রেসিডেন্টকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না কেন? তিনি এখন পর্যন্ত মাত্র দু’বার জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়েছেন এবং একবার একটি হাসপাতাল পরিদর্শন করেছেন। তবে সংকট মোকাবিলায় জাতিকে কোনো দিকনির্দেশনা তিনি দিতে পারছেন না এখনও।