বগুড়ার শেরপুরে গ্যাস ট্যাবলেট নিয়ে বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে উঠেও লাভ হয়নি। প্রেমিক নাজির হোসেন রাজি না হওয়ায় এবং প্রেম অস্বীকার করায় প্রেমিকা পারভীন আকতার (৩২) ওই ট্যাবলেট খেয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় উপজেলার শাহবন্দেগী ইউনিয়নের খন্দকারটোলার দক্ষিণপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
বুধবার সকালে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে।
তবে শেরপুর থানার ওসি শহিদুল ইসলাম জানান, আট বছর বয়সি ছেলে কথা না শোনায় ও কিছু টাকা চুরি করায় ক্ষোভ ও অভিমানে ওই শারীরিক প্রতিবন্ধী বিধবা আত্মহত্যা করেছেন। এ ব্যাপারে থানায় অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।
পারভীন আকতার শেরপুর উপজেলার খন্দকারটোলার দক্ষিণপাড়ার শাহ্ আলীর মেয়ে।
স্বজনরা জানান, ছয় বছর আগে স্বামী সাইফুল ইসলাম মারা যাওয়ায় তিনি আট বছরের ছেলেকে নিয়ে বাপের বাড়িতে আশ্রয় নেন। পরে স্থানীয় সাধুবাড়ি এলাকায় সিট কাপড় বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহী করতে থাকেন। একই গ্রামের গোলাম রব্বানীর ছেলে নাজির হোসেনের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
বিয়ের আশ্বাসে নাজির তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেন। পারভীন বিয়ের চাপ দিলে নাজির অপারগতা প্রকাশ করেন। বাধ্য হয়ে পারভীন বিয়ের দাবিতে গ্যাস ট্যাবলেট নিয়ে মঙ্গলবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত নাজিরের বাড়িতে অবস্থান নেন।
গ্রামের মাতবর ও উভয় পরিবারের সদস্যরা সমঝোতার চেষ্টা করলেও প্রেমিক নাজির তাদের প্রেমের সম্পর্ক অস্বীকার করেন। বিয়ে করবেন না বলেও জানিয়ে দেন। এতে পারভীন আকতার অভিমান করে পার্শ্ববর্তী এক চাচার বাড়িতে গিয়ে গ্যাস ট্যাবলেট সেবন করেন। এতে অসুস্থ হয়ে পড়লে স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে শেরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।
সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাকে বগুড়া শজিমেক হাসপাতালে স্থানান্তরের চেষ্টা করা হয়। পথিমধ্যে তিনি মারা যান।
তবে শেরপুর থানার ওসি শহিদুল ইসলাম জানান, বিধবা ও প্রতিবন্ধী ওই নারীর পরিবার জানিয়েছেন— ছেলে দুষ্টামি করায় ও দোকান থেকে ২০০-৩০০ টাকা চুরি করায় তিনি অভিমানে আত্মহত্যা করেছেন। মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে।
শাহবন্দেগী ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান-১ হাফেজ মাহমুদুল হাসান লিটন জানান, তিনি শুনেছেন বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে আশ্রয় নিয়ে ব্যর্থ হওয়ায় ওই নারী বিষপানে আত্মহত্যা করেছেন।