স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল জেলার বানারীপাড়া উপজেলার সলিয়াবাকপুর গ্রামের কুয়েত প্রবাসী হাফেজ আব্দুর রবের বাড়ি থেকে দুইজন পুরুষ ও একজন নারীসহ তিনজনের লাশ শনিবার সকালে উদ্ধার করেছে পুলিশ। লাশের ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।
বানারীপাড়া থানার ওসি জাফর আহম্মেদ জানান, নিহতরা হলেন, প্রবাসী হাফেজ আব্দুর রবের মা মরিয়ম বেগম (৭০), মেঝ বোন মমতাজ বেগমের স্বামী অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক শফিকুল আলম (৬০) ও খালাতো ভাই মোঃ ইউসুফ হোসেন (২৮)। নিহত মরিয়ম বেগমের নাতনি আছিয়া আক্তার বলেন, শুক্রবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে খাবার খেয়ে ঘরে থাকা আমরা সাতজন ঘুমাতে যাই। এরপর শনিবার ভোরে ফজরের নামাজ পড়ার জন্য ঘুম থেকে উঠে দাদিকে ডাকতে যাই। তখন দেখি দাদির রুমের বারান্দার দরজা খোলা এবং তিনি বারান্দায় পরে রয়েছেন। ডাকাডাকির পরে কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে আমি চিৎকার করলে পরিবারের অন্য সদস্যরা এসে দাদির মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হন। পরে ঘরের অন্য একটি কক্ষ থেকে ফুপার (শফিকুল আলম) ও ঘরের পাশের পুকুরের ঘাটলা থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় চাচার (ইউসুফ) লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত মরিয়মের পুত্র হারুন-অর রশিদ বলেন, আমার বোনের জামাই শফিকুল ইসলাম দুইদিন আগে নিজ বাড়ি স্বরূপকাঠি থেকে আমাদের বাড়িতে বেড়াতে আসেন। দুইদিন পর তার ঢাকায় যাওয়ার কথাছিল। অপরদিকে পার্শ্ববর্তী দাড়ালিয়া গ্রাম থেকে খালাতো ভাই ইউসুফ হোসেন রাতে থাকার জন্য আমাদের এখানে আসেন। মূলত বাড়িতে পুরুষ মানুষ না থাকায় প্রায়ই সে (ইউসুফ) এসে থাকতো।

বাড়ির মালিক প্রবাসী হাফেজ আব্দুর রবের স্ত্রী মিশরাত বেগম জানান, জমিজমাসহ নানান বিষয় নিয়ে আশপাশের কয়েকজন ব্যক্তির সাথে তাদের বিরোধ রয়েছে। ওই বিরোধের সূত্রধরে এ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটতে পারে। তিনি আরও জানান, বাড়ির ছাদের দরজা ছাড়া আর কিছ্ইু খোলা পাওয়া যায়নি। ধারনা করা হচ্ছে ওইদিক দিয়েই দুর্বৃত্তরা বাড়িতে প্রবেশ করতে পারে। তবে ঘরের কোনো মালামাল খোয়া যায়নি।

বরিশালের জেলা পুলিশ সুপার মোঃ সাইফুল ইসলাম বলেন, পুলিশের সুরাহাতাল রির্পোটে প্রত্যেকটি লাশের নাকের কাছে রক্ত দেখা গেছে। এছাড়া শরীরে তেমন কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। আবার দুর্বৃত্তরা তেমন কিছু লুট করে নেওয়ার খবরও পাওয়া যায়নি। তাই পুরো বিষয়টি বিভিন্ন দিক থেকে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। পূর্ব শত্রুতার জেরধরে এ হত্যাকান্ড ঘটতে পারে বলে ধারণা করে তিনি আরও বলেন, লাশের ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। পাশাপাশি বেশকিছু আলামত ও ঘরের বাসিন্দাদের বক্তব্য নেওয়া হচ্ছে। এ ঘটনায় হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

উত্তর দিন

Please enter your comment!
Please enter your name here

19 − four =