শনিবার (২৩ মে) সংসদ ভবনের সরকারি বাসভবনে এক অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আমাদের জীবন বাঁচানো এখন অগ্রাধিকার। আবার জীবন বাঁচাতে জীবিকাও সচল রাখতে হবে। এজন্য প্রয়োজন জীবন ও জীবিকার মাঝে সুসমন্বয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার তা করতে সর্বাত্মক প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছেন।

তিনি স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঈদ উদযাপন করার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহবান জানান।  ওবায়দুল কাদের বলেন, ঈদকে সামনে রেখে যারা নানা কৌশলে পুলিশকে ফাঁকি দিয়ে স্থানান্তর হচ্ছেন, তাদের মনে রাখা উচিত পুলিশকে ফাঁকি দিলেও করোনার সংক্রমণ ও মৃত্যুকে ফাঁকি দেওয়ার সুযোগ নেই। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ও মৃত্যু যেন নতুন ট্যাজেডি বয়ে নিয়ে না আসে, তা মাথায় রেখে স্বাস্থ্যবিধি মেনেই সবাইকে ঈদ উদযাপন করতে হবে।

করোনাভাইরাস পরবর্তী বিশ্ব বর্তমানের মতো হবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, করোনা সারাবিশ্বকে আজ বদলে দিচ্ছে। করোনা পরবর্তী জীবন আর এমন থাকবে না। পরবর্তীতে পৃথিবীর পরিবর্তিত পরিস্থিতি কেমন হবে, সেটা নিয়ে অনিশ্চয়তার কালো মেঘ থেকেই যাচ্ছে। তবুও জীবন থেমে থাকবে না। জীবন বহতা নদীর মতো। বদলে যাওয়া নতুন পৃথিবীতে নতুন পরিস্থিতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমাদের চলতে হবে। বাঁচতে হবে।

করোনা পরবর্তী অর্থনৈতিক বাস্তবতা ও সময়ের চাহিদার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে জীবন-জীবিকার প্রয়োজনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছেন জানিয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে এগিয়ে যেতে হলে ভারসাম্যমূলক পদক্ষেপ নেওয়ার বিকল্প নেই। আমাদের এখন নিজেদের বাঁচতে হবে। বেঁচে থাকার প্রয়োজনে মেনে চলতে হবে স্বাস্থ্যবিধি। জাতি হিসেবে আমাদের অনৈক্য, বিশৃঙ্খলা ও বিভেদ সংক্রমণকে সর্বগ্রাসী ও বিধ্বংসী করে তুলতে পারে। করোনা মোকাবিলায় ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড ও দক্ষিণ কোরিয়া যা পেরেছে, আমরা কেন তা পারবো না? করোনা পরবর্তী অর্থনৈতিক বাস্তবতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নানামুখী পদক্ষেপ প্রসংশার দাবিদার।’

দেশবাসীকে উদ্দেশ করে তিনি আরও বলেন, ‘দুর্যোগের অমানিশায় মানবতার বাতিঘর শেখ হাসিনা আপনার সঙ্গে রয়েছেন। সাহস ও মনোবল নিয়ে করোনা যুদ্ধকে আমাদের মোকাবিলা করতে হবে সম্মিলিতভাবে। তবেই আমরা সফল হবো ইনশাআল্লাহ।’

ঈদ উৎসব পালনের প্রসঙ্গটি টেনে আওয়ামী লীগ সম্পাদক বলেন, মুসলিম উম্মাহর সবচেয়ে বড় উৎসব ঈদুল ফিতর সমাগত। এবারের ঈদ এসেছে ভিন্ন বাস্তবতায়। ঈদে হাটে-বাজারে বা বিভিন্ন স্থানে বরাবরের মতো মেলামেশা, উদযাপন এইবার উদ্বেগের কারণ রয়ে গেছে। যে যেখানে ঈদ করি সংক্রমণ রোধে সচেতন থাকি। ঈদ জামাতের বিষয়ে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মেনে চলুন। মনে রাখতে হবে উৎসবের আনন্দ যেন বিষাদ সিন্ধুতে পরিণত না হয়।

সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ ঈদের পর পুরোদমে শুরু হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘উন্নয়ন কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে বলে গণমাধ্যমে কিছু রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। আমি বলতে চাই, করোনার এই সংকটকালে পদ্মা সেতুর মতো মেগা প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। চলছে পুরো গতিতে। মেট্রোরেল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্ণফুলী টানেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েসহ অন্যান্য কাজও সীমিত পর্যায়ে চলছে। ঈদের পরে প্রকল্পের কাজ আরও গতি পাবে। উন্নয়ন থেমে গেলে জীবন থেমে যাবে। জীবনের গতির মতো উন্নয়ন এগিয়ে যাবে।’

ঈদের সময় করোনা দুর্গত ও  ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবিলায় উপদ্রুত এলাকার অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য  আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান ওবায়দুল কাদের।

উত্তর দিন

Please enter your comment!
Please enter your name here

one × five =