বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলির সদস্য, ১৪ দলের মুখপাত্র ও সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম এমপি আর নেই। শনিবার (১৩ জুন) বেলা ১১ টা ১০ মিনিটে বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি ইন্তেকাল করেছেন (ইন্নালিল্লাহি…রাজিউন)।

মোহাম্মদ নাসিমের ছেলে ও সাবেক সংসদ সদস্য তানভীর শাকিল জয় এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

মোহাম্মদ নাসিমের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন, অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. জাহেদ মালিক, রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ আরও অনেকে।

রোববার (১৪ জুন) সকাল সাড়ে ১০টায় করোনা পরিস্থিতিতে বিদ্যমান স্বাস্থ্যবিধি মেনে বনানী কবরস্থান মসজিদে জানাযা শেষে বনানী কবরস্থানে মোহাম্মদ নাসিমকে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হবে।

মোহাম্মদ নাসিমের মেজ ছেলে তন্ময় মনসুর যুক্তরাষ্ট্র থাকেন। তবে করোনা পরিস্থিতিতে আকাশ যোগাযোগ বন্ধ থাকায় তিনি হয়তো দেশে ফিরতে পারবেন না।

মুক্তিযোদ্ধা ও ১৪ দলের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিমের মৃত্যুর সংবাদে আওয়ামী লীগসহ সারা দেশের মানুষের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে আসে। খবর শুনে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও মন্ত্রীরা হাসপাতালে ছুটে যান।

গত ১ জুন গুরুতর অসুস্থ হয়ে বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে ভর্তি হন মোহাম্মদ নাসিম। এরপর পরীক্ষায় তার দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। প্লাজমা থেরাপিতে কিছুটা সুস্থ হলে ৫ জুন তাকে হাসপাতালের আইসিইউ থেকে কেবিনে নেয়ার কথা ছিল। তবে ওইদিনই ভোরে তার ব্রেন স্ট্রোক হলে সকালে ওই হাসপাতালেই তার মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচার করা হয়। ৬ জুন অবস্থার আরও অবনতি ঘটায় তাকে ভেন্টিলেশনে রাখার পাশাপাশি ১৩ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়। এই বোর্ডের ৭২ ঘণ্টার নিবিড় পর্যবেক্ষণের সময়সীমা পার হওয়ার পর ৯ জুন নতুন করে সাত সদস্যের আরেকটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়।

মোহাম্মদ নাসিমের জন্ম ১৯৪৮ সালের ২ এপ্রিল সিরাজগঞ্জ জেলার কাজীপুর উপজেলায়। বাবা শহীদ ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী এবং মা আমেনা মনসুর। তিনি জগন্নাথ কলেজ (বর্তমানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়) থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৭৫ সালে সপরিবারে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর কারাগারে হত্যা করা জাতীয় চার নেতার একজন শহীদ ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলীর ছেলে মোহাম্মদ নাসিম সিরাজগঞ্জ-১ আসনের বর্তমান এমপি ছিলেন।

১৯৮৬, ১৯৯৬, ২০০১ ও ২০১৪ সালেও সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন মোহাম্মদ নাসিম।

তিনি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী, স্বরাষ্ট্র, গৃহায়ন ও গণপূর্ত এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন বরেণ্য এই রাজনীতিবিদ।

উত্তর দিন

Please enter your comment!
Please enter your name here

seventeen − 5 =